নাহিদ কবির কাকলী: গানের প্রতি সহজাত মমতাবোধ নিয়েই জন্মেছেন নাহিদ কবির কাকলী। বাংলাদেশের বিখ্যাত গীটার-শিল্পী এনামুল কবির তাঁর পিতা হওয়ার সুবাদে তিনি শৈশব থেকেই গানের আবহে বড় হয়েছেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে গানে হাতে-খড়ি হয় তাঁর। বাবার আগ্রহ ও নিবিড় পরিচর্যায় অচিরেই গানে দক্ষ হয়ে ওঠেন কাকলী। এর পরপরই তিনি উচ্চতর শিক্ষার জন্য গুরু হিসেবে পেলেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিক্ষক-গবেষক-তাত্ত্বিক ওয়াহিদুল হককে। শিক্ষক ওয়াহিদুল হক শিল্পী কাকলীর জীবনদর্শনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। পরবর্তীকালে তিনি বিখ্যাত শিল্পী মিতা হকের রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি অতুলপ্রসাদ, রজনিকান- সেন ও ডি এল রায়ের গানও শেখেন। এ ছাড়াও উচ্চাঙ্গ ও রবীন্দ্র ও অন্যান্য ধারার সঙ্গীতের তালিম নিয়েছেন ওস-াদ আমিনুল ইসলাম, কাদেরী কিবরিয়া ও অনুপ ভট্টাচার্যের কাছ থেকে। নানারকম গানের শিক্ষণ সত্ত্বেও রবীন্দ্রস্বরলিপির প্রতি তাঁর চূড়ান- মনোযোগ আত্মপ্রত্যয়ী এ শিল্পীকে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল করে তুলেছে।
শুদ্ধ ধারার রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চার সংগঠন ‘আনন্দ-ধ্বনি’র এক সক্রিয় ও নিষ্ঠাবান কর্মী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। ২০০১ সন থেকে তিনি কানাডায় বসবাস করছেন। সেই সময় থেকে এ পর্যন- ভারত, আমেরিকা ও জার্মানি ও কানাডায় তিনি গান করে গুণীজনের অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ২০০৫ সালে টরন্টো সাংস্কৃতিক সংস'া আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি অর্জন করেন ‘পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ডস’। দেশে অবস'ানকালে তিনি বাংলাদেশ বেতারের এ গ্রেডের রবীন্দ্রসঙ্গীত-শিল্পী ছিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনেও একাধিকবার অনুষ্ঠান করেছেন।
সঙ্গীতকে জনপ্রিয়তার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে নারাজ নাহিদ কবির কাকলী। জনপ্রিয়তার মোহে তাই সুরের সাধনার জগত থেকে কখনো এতটুকু বিচলিত হননি তিনি। তাঁর প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীতের সিডি ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে’ প্রকাশিত হয়েছে ২০০৮ সালে, যা উৎসর্গ করেছেন শিক্ষাগুরু ওয়াহিদুল হকসালে।তাঁর রবীন্দ্রসঙ্গীতের দ্বিতীয় সিডি “ আর রেখোনা আঁধারে” প্রকাশিত হয়েছে ২০১০ সালে। কে। রবীন্দ্রসঙ্গীতই নাহিদ কবির কাকলির ধ্যান-জ্ঞান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন নাহিদ কবির কাকলি। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে উচ্চতর শিক্ষা-গ্রহণ করেছেন কানাডা থেকে এবং এখন এখানেই কর্মরত আছেন রয়েল ব্যাংকে।