ঢাকা, ০৮ অক্টোবর- প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, 'নারীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় সরকারের মন্ত্রী পর্যন্ত বলেছেন, আমরা এটার দায় এড়াতে পারি না। আমরা জুডিশিয়ারিতে আছি, আমরাও চাই নারী নির্যাতনের উপযুক্ত বিচার হোক।'
প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের স্মরণে বুধবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত শোক সভায় একথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
আইন ও আদালত বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল' রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) এই স্মরণসভার আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি মাশহুদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোক সভায় আরো বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, আইনজীবী কে এম সাইফুদ্দিন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, এলআরএফের সাবেক সভাপতি আশুতোষ সরকার, সাবেক সহ সভাপতি শামীমা আক্তার ও মাহবুবে আলমের ছেলে সুমন মাহবুব। এলআরএফের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ ইয়াছিন শোক সভার সঞ্চালনা করেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, 'চাঞ্চল্যকর ফৌজদারি মামলায় আসামি খালাসের রায় গণমাধ্যমে যেভাবে প্রকাশিত হয়, মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা রায়ও সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ হওয়া উচিত।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জেল আপিলের শুনানি নিয়ে মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত অনেক আসামিকে আমরা ছেড়েছি। কারণ, আমরা সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছি, যে আমরা ন্যায় বিচার করব। সততার সহিত ন্যায় বিচার করব। তাই শপথের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিচার করেছি, ছেড়েছি। আপনারাও (সাংবাদিকরা) এ নিয়ে বড় বড় প্রতিবেদন করেছেন। বিশাল-বিশাল প্রতিবেদন করেছেন। আমিও টিভিতে দেখেছি যে, এত বছর কেন (আসামি) কনডেম সেলে ছিল? আপিল বিভাগ এত বছর কেন কিছু করেনি। হ্যাঁ, আপিল বিভাগ কিন্তু বসে থাকেনি।
আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণের নির্দেশ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের দুই কর্মকর্তাকে
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আপনারা (সাংবাদিকরা) প্রতিবেদন করছেন যে, এতোদিন ডেথ সেলে থাকার পরে আমরা ছেড়েছি কেন? কিন্তু আমরা গত কয়েকদিনে যে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছি। সেটার ওপর সংবাদ করেননি। আজকে এক মামলায় তিনজনের ডেথ নিশ্চিত (মৃত্যুদণ্ড বহাল) করেছি। এটা নিয়ে কোনো সংবাদপত্রে কোনো নিউজ নেই। যেখানে ছাড়া (খালাস কিংবা দণ্ড কমানো) হচ্ছে সেটা যেমন বলবেন আবার যেখানে সাজা হচ্ছে কিংবা মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হচ্ছে সেটাও বলবেন। এটা জানলে জনগণের স্বস্তি হবে। এটা মানুষের জানার অধিকার আছে।'
প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'তিনি আমাকে বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে একটা সেন্ট্রাল ফাইলিং সিস্টেম করেন। এটা যদি করেন তাহলে কোর্টের ৫০ শতাংশ অনিয়ম দূর হয়ে যাবে। আমি বারের (সুপ্রিম কোর্ট বার) নেতৃবৃন্দকে বলেছি আপনারা যদি সেন্ট্রাল ফাইলিংয়ে আসেন তাহলে বারের যে অনিয়ম আছে তার ৫০ শতাংশ চলে যাবে। কিন্তু বারের থেকে বললো সেন্ট্রাল ফাইলিং হবে না। আমরা (বার) আমাদের চয়েস অনুযায়ী কোর্ট নির্বাচন করব।
কিন্তু আমি আশা করব বার (সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি) মাহবুবে আলমের ইচ্ছাটা বাস্তবায়ন করবে। আর আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাই সেন্ট্রাল ফাইলিং। এটা যদি হয় তাহলে সুপ্রিম কোর্টের অনিয়ম ৫০ শতাংশ থাকবে না।
সূত্র : ঢাকাটাইমস
এম এন / ০৮ অক্টোবর