কক্সবাজার, ৫ অক্টোবর- কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মো. ইয়াছিন (২৭) নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৫ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পের ডি-৪/২ ওয়েস্ট ব্লক থেকে এ মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। সে ওই ক্যাম্পের মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে।
উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিজ বাড়ি থেকে ইয়াসিনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। মৃতদেহটির ঘাড়ে ধারালো দায়ের কোপের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল।
এদিকে, কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল আহমদ জানান, ক্যাম্প ২ ওয়েস্ট ডি-ব্লকে রবিবার রাতে মুন্না গ্রুপের ৪-৫শ’ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দা-লাঠি সোটা নিয়ে ক্যাম্পের শতাধিক ঝুপড়ি ঘর ও ৫০টি দোকান ভাঙচুর করেছে।
তিনি আরও জানান, আনাস গ্রুপ ও মুন্না গ্রুপের মধ্যে সংঘাতে প্রাণ বাঁচাতে কয়েকশ’ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু কুতুপালং ক্যাম্প ছেড়ে অন্য ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে বলে রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন।
এদিকে গত ৫ দিনের ঘটনায় ক্যাম্পে এক নারীসহ ৪ জন খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৫ জনের বেশি রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু। এ নিয়ে ক্যাম্পে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: মা-মেয়েকে বেঁধে নির্যাতন: পরোয়ানা নিয়ে দলীয় সভায় চেয়ারম্যান মিরান
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দু’গ্রুপের মধ্যে হামলা, ভাঙচুর, গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে বলে রোহিঙ্গা মাঝি মো. আয়ুব মাঝি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার, অস্ত্র ও স্বর্ণ ব্যবসার মতো অসংখ্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিরাতে ক্যাম্পগুলোতে শোনা যায় গুলির শব্দ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়জিত ১৪ এপিবিএনের উপ-পরিদর্শক ইয়াসিন ফারুক জানান, নতুন ও পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিরোধের জেরে খুনের ঘটনাগুলো ঘটছে। বর্তমানে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আর/০৮:১৪/০৫ অক্টোবর