রাজবাড়ী, ৫ অক্টোবর- গোয়ালন্দ উপজেলার নদী তীরবর্তী দেবগ্রাম ইউনিয়নের হাজারের বেশি পরিবার ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে। ভাঙন আতঙ্কে প্রায় ১০০ পরিবারের বেশি অন্যত্র সরে গেছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ভাঙনও বেড়েছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সি পাড়া, আজিজ সরদার পাড়া ও দেবগ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকা অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেছে। প্রতি বছর বর্ষার পানি বাড়লে ও পানি কমলে শুরু হয় নতুন করে ভাঙন। আতঙ্কিত অনেক পরিবার বসতভিটা ফেলে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। জায়গা না থাকায় এখনো নদী পাড়ে রয়েছে কিছু পরিবার। পৈতৃক ভিটা ও শেষ স্মৃতিচিহ্ন কবরস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছেন তারা।
সামাদ সরদারের মেয়ে বেদেনা বেগম বলেন, এখানে আমার চাচা নবী সরদারের কবর রয়েছে। পাশেই মা রোকেয়া বেগম, ভাতিজা শামীম সরদার, ভাগনে মফিজ সরদারের কবর রয়েছে। গ্রামের বেশির ভাগ পরিবার চলে গেছে। শূন্য ভিটায় খুপরি মেরে এখনো আছি। এবার ভাঙনে এখন কোথায় যাব সে চিন্তায় আছি।
দেবগ্রামের লিয়াকত সরদার বলেন, বেতরের চর ভেঙে তিন ভাঙা দিয়ে এখানে এসেছি, আবার যদি জব কিছু নদীতে চলে যায় তাহলে আমার আর কিছুই থাকবে না। ১০ বছরে প্রায় সব শেষে বাড়ির ভিটে ছাড়া কিছু নেই। এ বছর গ্রামের প্রায় ১০০ পরিবার চলে গেছে। এখনো আছি যদি ভাঙন থেমে যায় তাহলে এ বছর থাকতে পারবো।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে এমপি জিল্লুলের ‘শাসন’
দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষার পানি কমার সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের দেবগ্রাম, কাওয়ালজানি, আজিজ সরদার পাড়া, মুন্সী বাজার, মোমিন সরদার পাড়া, মাইনদ্দিন মেম্বার পাড়াসহ এলাকার কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি ও প্রায় আড়াইশ পরিবার অন্যত্র গেছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে গ্রামের প্রায় দেড় হাজার পরিবার।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি দ্রুত কাজ শুরু হবে।
সূত্র : দেশ রূপান্তর
এম এন / ০৫ অক্টোবর