বোগোতা, ১১ সেপ্টেম্বর- পুলিশি হেফাজতে এক ট্যাক্সি চালকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল কলম্বিয়া। বিক্ষোভে সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলি নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
বিবিসি ও ডয়চে ভেলে অনলাইন জানায়, পুলিশি নির্যাতনে জেভিয়ার অর্ডোনেজ নামে এক ট্যাক্সিচালকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী বোগোটায়।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলল রাতভর। বিক্ষোভে নির্বিচারে গুলি করার অভিযোগে উঠেছে। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে বৃহস্পতিবারও। সংঘর্ষে নিহত হন ১০ জন। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে গুলিতে।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বছর বয়সী ট্যাক্সিচালক জেভিয়ার বারবার পুলিশের কাছে অনুনয় করলেও তার উপর নিপীড়ন চালানো হয়। অন্তত পাঁচবার তাকে ইলেকট্রিক শক দেয় পুলিশ।
প্রথমে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নেয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে জেভিয়ারকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তার দেহে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। পরিবারের দাবি, পুলিশের অত্যাচারে জেভিয়ার মারা গেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘন করে ওই ট্যাক্সিচালক একদল লোকের সঙ্গে অনেক রাত পর্যন্ত মদ খাচ্ছিলেন। পুলিশের সঙ্গে খুবই দুর্ব্যবহার করেন। কিন্তু তাকে এর জন্য কেন তাকে মারা হলো, তার ব্যাখ্যা পুলিশ দেয়নি।
কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলকে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চালানোর দাবি জানান বোগোটার মেয়র ক্লাউডিয়া লোপেজ দাবি। কারণ পুলিশি তদন্তে কোনো ভরসা নেই মৃতের পরিবারের।
আরও পড়ুন: কলম্বিয়া জুড়ে সহিংসতা, নিহত অন্তত ১৭ জন
এদিকে জেভিয়ারের মৃত্যুর খবর আসার পর ঘটনাস্থলে জড়ো হতে থাকে প্রতিবাদী মানুষ। এরপর পুরো শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ-স্টেশন ভাঙচুর করে তারা। রাতভর চলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ। এতে নিহত হন ১০ জন।
মেয়র জানান, বিক্ষোভে মোট ৩২০ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ১৪৭ জন পুলিশ কর্মী। কিন্তু পুলিশ যেভাবে বিক্ষোভ দমন করেছে, তাতে প্রবল ক্ষুব্ধ তিনি।
তার ভাষ্য, পুলিশকে কেউ গুলি চালানোর অনুমিত দেয়নি। তা সত্ত্বেও পুলিশ অনেক জায়গায় নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। আহতদের মধ্যে অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ।
এদিকে বাড়িতে থাকতে শহরে বাসিন্দাদের প্রতি বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। তারা যাতে রাতে রাস্তায় না নামেন। শহরে আরও দেড় হাজার পুলিশ ও ৩০০ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
সূত্র : দেশ রূপান্তর
এম এন / ১১ সেপ্টেম্বর