মাস্কাট, ১০ ডিসেম্বর - কূটনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মন্দা ভাব এবং নিজ দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থান করতে অভিবাসীদের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। সৌদি আরব, কাতার, লেবাননের পাশাপাশি ওমানও সেদিকে নজর দিয়েছে। আর সেই ধারাবাহিকতায় ধীরগতিতে হলেও অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে দেশটি।
গত এক বছরে ৭০ হাজার ৭৮১ জন অভিবাসী ওমান ছেড়ে নিজ দেশে চলে গেছেন। ওমানের জাতীয় পরিসংখ্যান ও তথ্য কেন্দ্রের (এনসিএসআই) বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশটির দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওমানে সব মিলিয়ে অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ৯৭৫ জন, আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এসে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩০ হাজার ১৯৪ জনে।
সে হিসেব অনুযায়ী দেখা গেছে, গত এক বছরে ৭০ হাজার ৭৮১ জন বিদেশি ওমান ছেড়ে চলে গেছেন। যা ওমানে গত দুই বছরে নির্মাণ খাতে কর্মরত মোট অভিবাসী শ্রমিকের ১৭ শতাংশ।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়া, ওমানের অর্থনৈতিক মন্দা, ওমানিকরণ করার বিপরীতে এসব নাগরিকরা ওমান ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
সম্প্রতি ওমান থেকে ফেরত এসেছেন চট্টগ্রামের নুরুল আবসার। তিনি ওমানে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত বসবাস করে আসছিলেন। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ সমিতি ওমানের একজন সিনিয়র সদস্য ছিলেন। কোনো কারণ ছাড়াই তাকে ওমান গোয়েন্দা পুলিশ দেশে পাঠিয়ে দেয়।
গত এক বছরে নুরুল আবসারের মতো অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে কোনো কারণ ছাড়াই বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে ওমান সরকার। আবার অনেকেই এখন আগের মতো ব্যবসা বাণিজ্য না থাকায় স্বেচ্ছায় দেশে চলে এসেছেন।
চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের সভাপতি ইয়াসিন চৌধুরী বলেন, ‘এখন ওমানে আর আগের মতো ব্যবসা নাই, এ ছাড়াও নানা কারণে এখন ওমানে বাংলাদেশিদের জন্য তেমন কোনো সম্ভাবনাও নেই। ’
টাইমস অব ওমানের এক খবরে বলা হয়েছে, ওমানে গত এক বছরে প্রায় ৯০টি পেশায় ওমানিকরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সেক্টরের ভিসা। শুধুমাত্র শ্রমিক ক্যাটাগরির কিছু ভিসা বাংলাদেশিদের জন্য খোলা থাকলেও আইটি, অ্যাকাউন্টিং, ফিনান্স, বিক্রয়, বিপণন, পরিচালনা, মানব সম্পদ, বীমা, মিডিয়া, মেডিকেল, বিমানবন্দর এবং প্রকৌশল খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলো এখন বন্ধ বাংলাদেশিদের জন্য।
এ ছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ওমান সরকার বিদেশি শ্রমিকদের জন্য কন্সট্রাকসন সেক্টরের কারপেনটার, স্টিল ফিটার, অ্যালুমিনিয়াম, ইটের কারখানাসহ মোট ৮৭টি পেশার ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে।
এন এ/ ১০ ডিসেম্বর